পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকে প্রথম প্রথম আসার পর এক জয়েন্ট সেক্রেটারিকে পাই তিনি জৈন ছিলেন, মানে সিন্ধিদের মত পদবীও জৈন ছিল। তাঁর সবথেকে বড় গুণ ছিল তিনি সকলকে ‘ভাইয়া’ বলে ডাকতেন, সে উত্তর প্রদেশেরই হোক বা অরুণাচল। তবে নিজের ছেলে বা বাবাকে কি বলে ডাকতেন সে আইডিয়া নেই। যাই হোক কথায় কথায় বোন ভাই পাতানো আমার স্বভাব নয়- তাই সে গল্প থাক।
একটা ঘটনা বলি, একদিন ওনার রুমে ঢুকে দেখি একটা ইঁদুরের বাচ্চা (বিতৃষ্ণা ভরে বলি নি, সত্যি সত্যিই বাচ্চা)। তা সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক প্রতিবর্ত ক্রিয়া থেকে এক পা মেদিনীচ্যুত করতেই তিনি ‘হাঁই হাঁই’ করে উঠলেন। কেষ্টর জীব, মারা যাবে না। জৈনরা খুব ভালো মুখ বন্ধ করে ঘুমোয় পাছে মশা মাছি ঢুকে মরে না যায়-রসুন খায় না, গন্ধে মরে না যায় ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই সযত্নে ইঁদুর ছানা (এখন আর বাচ্চা নেই বর্ণপরিচয় পড়া শিক্ষিত হয়ে গেছে)টিকে তুলে কার্ডবোর্ডের বাক্সে স্থাপন করে দিলাম। হাজার হোক চাকরী করতে হবে তো?
এই এতক্ষণে ভূমিকার সমাপন হল, এবার ঢেঁকুরটা তুলি। কদিন আগে, একটা ধেড়ে বাঁদরের মত দেখতে ইঁদুর ঘরে ঢুকে পড়েছিল… পুরনো ব্যাটগুলোর একটি নিয়ে সদর দরজা খুলে অপেক্ষা করছিলাম- যেই শেন ওয়ার্নের লেগস্পিন খেয়ে কার্নিক মেরে কেটে পরতে গেছে, সপাটে কভার ড্রাইভ… দুই পাল্লার ফাঁক দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে।
কিন্তু ভাল স্পিনার হতে গেলে কলজেটাও বড় হতে হবে। এক চৌকায় ভয় পেলে কি উইকেট পাবে খোকা? তার বেশ কয়েকদিন পরে বাবা- মা এসেছিলেন বলে আমি মাটিতে ম্যাট্রেস পেতে শুয়েছিলাম… রাত বারোটা নাগাদ অনুভব করি একটি চড়াইপাখির মতো মশা তার উপস্থিতি আমার হাতে জানান দিল। ঘুম ভেঙে উঠে দেখি মশকুইটো রিপেল্যান্টটা জ্বালাতে ভুলে গেছি। ভুল সংশোধন করে শুলাম ভোর রাত্রে চড়াইপাখিটা কাকের মতো ঠোক্কর মারতেই তড়াক করে উঠে বসে বুঝলাম কট বিহাইন্ড… ওয়ার্নে দাদা তক্কে তক্কে ছিলেন আমার হাত ছুঁয়ে ‘আব্বু ধুকি’ করেই পালিয়েছেন।
আধোঘুমে জেগে বসে এন্টিস্যাপ্টিক দিতে দিতে সিনিয়র ওয়ার্নকে গাল পারলাম ও পরের দিন ভোর না হতেই টেটভ্যাক নিয়ে উইকেট বাঁচালাম।
তারপর থেকে শুরু হলে ঘূর্ণি পিচে স্পিনের ভেলকি… একা রামে রক্ষা নেই সঙ্গে ভাই লক্ষণ আর তার উপরে চেরির মত সুগ্রীব দোসর। একটা জাবদা ওয়ার্ণে তো ছিলই সঙ্গে যুক্ত হল পুঁটকে মুরলী আর ছুটকে মুস্তাক আহমেদ। একদিন ছোলার খোলা ছড়িয়ে খোলা খেলে যায় তো পরের দিন ডাস্টবিনে বাস্কেটবল খেলে যায়। র্যা টকিল নিয়ে এলাম… ওই যে গো যেটি খেয়ে শুঁড়িখানার বাইরের নালায় মাতালরা পড়ে থাকে… শুঁড়িখানা পোস্কার থাকে। তা তাতে গোদা গোদা করে লেখা দেখলাম তিন চার দিন পরে উল্টোবে। মানে মাল টানবে মহালয়ের নেশা হবে দশমীতে… ম্যাগো… তা সে খেয়েও দিব্বি ঘুরে ফিরে ‘কেমন দিলাম’ মার্কা মুখ করে ঘুরে বেড়ায়।
মা বাবা গেলেন, বলে গেলেন রান্নাঘর খুলিস নে রাতে… নাহলে সব যাবে।
তা যাই হোক পরের দিন..মুরলী বোধহয় একটু বেশীই সাহসী হয়ে পরেছিল… দিব্বি আমার সামনে দিয়ে গ্যাসতুতো সিলিন্ডারের পিছনের বাসায় ঢুকতে গেল। আমিও তেঁটিয়া হাতের কাছে যা পেলাম দিলাম ছুঁড়ে। চোখ মেলে দেখলাম সেটি রুটি বেলার বেলন, সেও উড়ন্ত জোকারের মত বনবন করতে করতে গিয়ে কোথাও একটা লাগল আর মুরলীধরণ ক্যাটারিনার কাঁধে বসা মাছির মতো পিছলিয়ে দরজা বেয়ে পড়ে গেল। তারপর সাফলার এড, ‘ধুক ধুক’ ‘ধুক ধুক’। কেষ্টর জীবের কেস শেষ করতে যে একটু কষ্ট হল না তা নয়।
কিন্তু রাবণের বংশধর উড়িলে কি হবে বেবুনের বংশধর তো রয়েছে। ধেড়েটা পরের দিন বাসনের সমুদ্র থেকে উঠে দাঁড়াল কুম্ভকর্ণের মতো… জানলা দিয়ে বেরোতে গিয়ে দেখল শিল নোড়া… নোড়ার উপর বেশ কিছুক্ষণ ব্যালেন্স বিম খেলে তিনি শীলের পিছন দিয়ে টুকি করতে গেলেন। বিজয়া দশমীর পর থেকেই নিজের থোবড়াটার সঙ্গে অসুরবাবুর খুব মিল খুঁজে পাচ্ছি। আহা মা নেই মা নেই বল কত লোকে তো কাঁদে, কেউ তো বলে না ইস সেক্সি অসুরটাকে আর দেখতে পাব না… যাই হোক পাষণ্ড পাষাণ হৃদয় এক চাপড়ে শীলটাকেই দিলাম চেপে। কুম্ভকর্ণ বেড়িয়ে এলো তার নীচ থেকে কেষ্ট মুখুজ্জের মত। শীলটা আমার হাতে, তিনি রবার্ট ব্রুসের মতো জানলার নেট বেয়ে আর্ধেক উঠে, “মৌসিজি, বসন্তী” করতে লাগলেন। মায়া লাগল জানেন… শীলটার জন্য, সাধের পোস্ত বাটার জন্য, দেখলাম একটু রক্তও যেন পড়ে আছে। আমি একমনে শীল ধুতে লাগলাম আর তিনি এক্সজষ্ট বেয়ে বেরোতে গিয়ে পুণ্ডরীকাক্ষ পুরকায়স্থ… “কোন পথে যে চলি, কোন কথা যে বলি…”
কি আর বলি… দু দিন হয়ে গেল জানেন… টুকরো টুকরো র্যাটকিল রান্নাঘরের এদিক ওদিক বসে আছে পথ চেয়ে… কিন্তু তোমার দেখা নাই রে… টেলিফোন বেজে বেজে যাচ্ছে… মুস্তাক আহমেদও বোধহয় এ সব দেখে শুনে কৈলাসে কেলেঙ্কারি করতে চলে গেলেন। আম্মো চললাম। অনেক দিন পরে নিশ্চিন্তে দরজা খুলে ঘুমোব… নজর দিবেন না। Trespassers will be prosecuted.
khub bhalo … manusher raag khudra idurer opor proyog kore ‘jhal’ metanota mondo noy … detailing khub bhalo … prachur moja royechhe poribeshonai … sindhi der moto padabi kintu jain …. amar ekjon porichito Jain bandhu achhe padabi Rupani 🙂
LikeLike