(১২৭)

বেশ কিছুদিন ফিসফাস থেকে দূরে ছিলাম। কিছুটা ইচ্ছাকৃত আর কিছুটা হয়তো অনিচ্ছা। আসলে ল্যাপটপটি বিগড়ে গিয়ে সব গড়বড় করে দিয়েছিল। আর সত্যি কথা কি সব কিছুতেই ব্লগ লিখতে গেলে ইনস্ট্যান্ট কফির এফেক্ট এসে যেতে পারে। শুধুই ধোঁয়া- স্বাদ গন্ধ আর প্রভাব বলতে কিছুই নেই।
তাই বেশ কিছুদিন চুপচাপ পড়াশুনো চলছিল, বাকি কাজের ফাঁকে ফাঁকে।

দুটি ঘটনা সদ্য সদ্য ঘটে গেল, চিত্তচাঞ্চল্যের জন্য যা যথেষ্ট। প্রথম বাংলাদেশী এবং আমেরিকার নাগরিক তথাকথিত নাস্তিক ব্লগার অভিজিত রায়ের হত্যা এবং লেসলি উডউইন নাম্নী এক তথ্যচিত্রকারের India’s Daughter তথ্যচিত্রটি। এগুলি নিয়ে সকলের ভিন্ন ভিন্ন কিন্তু যথেষ্ট জোরালো বক্তব্য রয়েইছে। ফিসফাসেরও রয়েছে। কিন্তু এই ফিসফাসে আমি সেই মতামতগুলির থেকে কিছু গল্প এবং ঘটনার উল্লেখ করাটাই শ্রেয় মনে করছি। আদতে ফিসফাসের লেখক নিজের ঢাক পেটাতেই স্বচ্ছন্দ। সাহসী মন্তব্যে নয়।

নটবর সিং-এর One Life is Not Enough-এ উল্লেখ আছে যখন তিনি পাকিস্তানে ভারতের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত হলেন তখন তিনি দিল্লিতে পাকিস্তানের তদানীন্তন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে জানতে চাইলেন, “পাকিস্তানে গিয়ে কি বলতে হবে আমি জানি। কিন্তু আমাকে বলুন কি একেবারেই বলা যাবে না!” উত্তর পেয়েছিলেন, “কখনই বলবেন না আমরা আর আপনারা এক। এক নই। এক হলে একসঙ্গেই থাকতাম।”
BL02_Natwarsingh_b_2035170g

আরও এক জায়গায় পড়েছিলাম যে, কোন দেশের যখন ইতিহাস বলে কিছু থাকে না তখন দেশটাকে এক সূত্রে বেঁধে রাখার জন্য অন্যান্য যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। ধর্ম বা ভাষা হল সেই যন্ত্রপাতি।

পাকিস্তান রাষ্ট্রটি গঠিত হবার রাজনীতি আমরা সকলেই জানি। নিজের নিজের মতো করে তাদের উপর দায় চাপিয়েও দিই। কিন্তু আসল ঘটনা হল, পাকিস্তানকে এক রাখা বছর বছর ধরে রাষ্ট্রনায়কদের কাছে এক দুরূহ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের থেকে সে সমস্যাটা একেবারেই আলাদা। ভারতের মধ্যে ভাষা হিসাবে হিন্দিকে চাপিয়ে দেবার একটা চেষ্টা থাকলেও সেটা জোরদার কিছু নয়। কিন্তু পাকিস্তান এবং পূর্ব পাকিস্তানে ঊর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে চাপিয়ে দেবার প্রচেষ্টাটি বড়ই নিদারুণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা আন্দোলন নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু ঘটনা হল পাকিস্তানেও সমস্যাটি ছিল। পাকিস্তান আসলে পাঞ্জাবী, পুস্তো, সিন্ধি, সড়াইকি ঊর্দু এবং বালোচ ভাষাভাষীর এক অ্যাসর্টমেন্ট। সেখানে মাত্র ৭%-এর ভাষা ঊর্দু হলেও তার বুনিয়াদের কথা ভেবে তাকে রাষ্ট্র ভাষায় পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা যথেষ্ট সমাদর পায় নি। তার উপর, পাকিস্তানের তখনকার রাষ্ট্র নায়ক কায়েদ ই আজমই ঊর্দুতে পোক্ত ছিলেন না।

তাই আমদানী হল ভারত বিদ্বেষ এবং ধর্মীয়করণের। আসলে ঐতিহ্য না থাকলে শুধুমাত্র ধর্ম এবং ভাষা এই দুই অন্ধের যষ্টিও দীর্ঘকালীন ইতিহাসে কম পড়ে যায়।

আশা করি বাংলাদেশের গল্পটি আলাদা করে বলতে হবে না। বাংলাদেশের আরও বেশী সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল দেশের অর্থনীতি। দূর্বল অর্থনীতিকে ধামাচাপা দিতে রাষ্ট্র বরাবর আবেগের সাহায্য নিয়েছে। সে পঞ্চাশের দশকের ইউরোপই হোক, ষাটের দশকের আমেরিকা, সত্তর দশকের ভারত বলুন বা আশির দশকের সোভিয়েত। যে দেশ টিকিয়ে রাখতে গেলে ভাবাবেগের প্রয়োজন হয় তার অবস্থা কহতব্য নয় সে তো বলার কথা নয়। বাংলাদেশের মানুষদের জন্য প্রথমে ধর্ম এবং তারপর ভাষার ভিত্তিতে এই দেশভাগ নতুন করে কোন সৌভাগ্য এনেছে কিনা সেটা সত্যিই ভাবার কথা।

হতে পারি আমি এপার বাংলার মানুষ বলে হয়তো বাংলাদেশকে সহজেই অন্য দেশ বলে মানতে পারি। যদিও ভাষার মিলটা ঠিক উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমি যে ভাষাতে ভাবতে শিখেছি, ঠিক সেই ভাষাতেই কেউ আমার পাশের বাড়িতেই ভাবছে লিখছে বলছে- কোথাও না কোথাও তো একাত্মতা এসেই যায়। তার বাড়িতে সমস্যা হলে ফ্ল্যাটবাড়ির মানসিকতা নিয়ে খিল এঁটে বসে থাকাও কি যায়? রাজীব হায়দার বা অভিজিত রায়ের হত্যা, শাহবাগের আন্দোলন তাই ঘরের পর্দাকে বিনা হাওয়াতেও দুলিয়ে দিয়ে যায়। যে কোন ধরণের মৌলবাদ মানুষকে তার মনুষত্ব হারিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।

কিন্তু কোথাও যেন মনে হয় ধর্ম আর মৌলবাদ এক নয়। মৌলবাদে ধর্মের সঙ্গে সঙ্গে মিশে যায় সামাজিক আচরণ এবং অপরের প্রতি বৈষম্য।

Book of Genesis থেকে একটা গল্প বলি শুনুন। ইজরায়েলি রাজপুত্র অমিতশক্তিধর স্যামসনকে বস করার জন্য ফিলিস্তিনিরা পাঠায় সুন্দরী ডেলাইলাকে, যার দিদি আবার স্যামসনকে ভালবেসে মারা গিয়েছিল। ছলে বলে কৌশলে, ডেলাইলা জেনে যায় যে স্যামসনের ভগবানদত্ত শক্তির পিছনে রয়েছে তার লম্বা লম্বা চুল। তারপর আর কি চুল কেটে ফেলে ফিলিস্তিন সৈন্যদের হাতে তুলে দেয় সে। সৈন্যরা শুরুতেই স্যামসনের চোখ গেলে দেয় বেঁধে নিয়ে যায় গাজায় অবস্থিত মন্দিরে। যেখানে সবাই জড় হয় পরাক্রমী শত্রুর মৃত্যুর খেল দেখার জন্য। কিন্তু চুল ততদিনে একটু একটু বড় হয়েই গেছে। স্যামসন তখন পরম পিতার কাছে একান্তে প্রার্থনা করে শেষবারের মতো তার শরীরে অমিতবিক্রম দিতে। মঞ্জুর হয় প্রার্থনা। বিশাল মন্দিরের মধ্যবর্তী দুই থামে বাঁধা অবস্থায় স্যামসন সর্বশক্তি দিয়ে টান মারে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি সহ স্যামসন বীরের মৃত্যু বরণ করে। (ফিলিস্তিনিরা অবশ্য বীরের মতো মরতে পারে নি বা বাইবেল তার উল্লেখ করে নি। তারা তো উল্লাসের মধ্যেই মৃত্যুভয় অনুভব করে। বাইবেলের শহীদ তো একা স্যামসনই) পরে স্যামসনের ভাই এসে তার মৃতদেহ খুঁজে বের করে কবর দেয় অধুনা ওয়েস্ট ব্যাঙ্কস এলাকায়।

Samson-and-Delilah
ইজরায়েল আর প্যালেস্টাইনের যুগোত্তরীত যুদ্ধের কারণ খুঁজতে তো না হয় এত দূরে চলে গেলাম। কিন্তু হিন্দু মুসলমান বা ভারত পাকিস্তান? তাদের বিভেদের ইতিহাস তো এত পুরনো নয়! সাধারণ হিঁদু আর মোছলমান তাদের বিভেদ নিয়েই তো এতদিন এক হয়ে ছিল। তাহলে রাষ্ট্রের প্রয়োজনটা কি শুধুমাত্রই রাষ্ট্রনায়কদের প্রয়োজন? বিভেদটাই বিদ্বেষ হয়ে দাঁড়ালো? দেশের রাজধানী আমার কর্মক্ষেত্র আর সাংস্কৃতিক রাজধানী আমার জন্মভূমি। উভয় স্থানেই কি এই বিভেদটা আমরা দেখতে পাই? বা অনুসূচিত জাতি বা জনজাতিদের প্রতি বৈষম্য?

এই প্রশ্নগুলোর মধ্যেই হঠাৎ করে সামনে চলে এল নির্ভয়া ডকুমেন্টারি। আমি জানি না ইউরোপ বা অ্যামেরিকায় কজন বিদেশী ডকুচিত্রকারকে বিচারাধীন বন্দির সাক্ষাতকার নিতে দেওয়া হয়, বা আদৌ হয় কি না। কিন্তু সে সব হয়ে যাবার পর আমাদের ঘুম ভাঙে, আর সরকার এগারোটা পঞ্চাশে উঠে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করে ব্যান।

এমনিতেই শিক্ষা সংস্কৃতির গেরুয়াকরণ নিয়েই সবাই শঙ্কিত। যদিও ইতিহাস ঘাঁটলেই দেখা যায় ক্ষমতাসীনদের গল্পই ভবিষ্যতের দর্পণে ছায়া ফেলে। পরাজিত নিপীড়িতরা ধীরে ধীরে ছায়ায় মিলিয়েই যায়। তাই বিজয় গর্বে ব্যান শব্দের সেন্সরশিপের জরুরী অবতরণ। ইংরাজি সাহিত্যের আমি খুব মনোযোগী পাঠক না হলেও, Fifty Shades of Grey পড়েছিলাম, আরও সোজাসুজি বলতে গেলে পড়তে হয়েছিল। তবে সত্যি বলতে কি বড়লোকি খেলো পর্ণগ্রাফি ছাড়া আর কিছুই মনে হয় নি। কিন্তু তা বলে তার চলচ্চিত্র রূপান্তরকে ব্যান করতে হবে বলে পহেলাজীয় ফরমান কি মেনে নেওয়া যায়? মানুষকে তার প্রাপ্তমনস্কতার সম্মান তো দিতেই হয়।

কিন্তু এখানেই হঠাৎ চলে আসে তথ্যচিত্রটির প্রসঙ্গ। গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে সকল ভারতীয় পুরুষের দেখা উচিত এবং নিজের নারকীয় রূপ দেখে লজ্জায় মুখ লুকানো উচিত। কিন্তু তারপর? আমার যদি লজ্জা না পায়, আর আমি যদি মনে করি যে মুকেশ বা তার মুখ- এপি সিং যা বলছে তা তো সত্যিই তাহলে? তাহলে কি আমার প্রাপ্তবয়স্কতা আমার প্রাপ্তমনস্কতার প্রতিফলন হচ্ছে? আসলে জমিনি বাস্তব আমাদের দেশে খুবই কঠিন। যেখানে সাধারণ মানুষকে ধর্মীয় আর ঐতিহ্যের আফিম খাইয়ে বুঁদ করে রাখা হয়। নারী দিবসের প্রয়োজন পড়ে অর্ধেক মানবজাতির উপস্থিতি মনে করিয়ে দেবার জন্য। তার সম্মান পথে, প্রবাসে, টিভির পর্দায়, লোকসভার অভ্যন্তরে বারবার লুণ্ঠিত হয়। আর দোষ হয় পথিকেরই। আগে থেকে সাবধান না হলে তো এসবই হবে।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এক বিদেশিনীর করা তথ্যচিত্র কতটা সংবেদনশীলতা আনতে সক্ষম হবে বলে মনে করি? 91.1 রেডিও সিটিতে তর্ক করতে এসে অধিকাংশ ভারতীয় সমাজের ওকালতি প্রতিভূ নির্ভয়ার চরিত্র নিয়ে স্বচ্ছন্দে প্রশ্ন তুলতে পারেন এবং বুক ঠুকে বলতে পারেন যদি শ্রোতাদের মধ্যে অধিকাংশ তাঁর বক্তব্যের বিরোধিতা করে তাহলে তিনি এই মামলা থেকে সরে যাবেন। কিন্তু যিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আইনের মতো এক মহান পেশার প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে চলেছেন, কি মনে হয়, তিনি সরে গেলে আমাদের দেশে ধর্ষণ নাম্নী এই আদিমতর পাপ কমে যাবে? ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় এই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি এবং দোষীদের শাস্তিপ্রদানের মধ্যেই সুস্থ মানবতার জয় লেখা আছে।

কিন্তু আজকের মিডিয়া ট্রায়াল আর পপ অ্যাক্টিভিজমের যুগে ভয় হয় যে সকলের অবস্থাই ওই ডিমাপুরের ধর্ষণ অভিযুক্তের মতো না হয়ে যায়। প্রমাণিত হবার আগেই গণবিচারে হত্যা। মধ্যযুগীয় বর্বরতার শাস্তি প্রাচীন বর্বরতার মাধ্যমে। আইন আইনের পথে চলুক। প্রয়োজন বিচারব্যবস্থাকে সঠিক গ্লুকোজ প্রদান, যাতে সুষ্ঠু বিচার দ্রুত সম্পন্ন হতে পারে।

শুরু করেছিলাম অভিজিত রায় হত্যা এবং নির্ভয়া ডকুমেন্টারির উল্লেখ করে। কিন্তু এখন যেন মনে হচ্ছে কোথায় যেন উভয় ঘটনাই এক। সংবেদনশীলতার অভাব, বৈষম্য উভয় ক্ষেত্রেই প্রবল। ধর্মকে জীবনের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা আর হাজার বছরের পুরনো কিছু ক্ষয়ে যাওয়া ব্যবহারিক প্রয়োগকে ঐতিহ্যের নামে মাথায় তুলে রাখা। শৃঙ্খলটা ভাঙুক, কিন্তু সেটা সার্বিকভাবে ভাঙলেই মঙ্গল। না হলে আবার ফস্কা গেরোর মধ্যে দিয়ে কালনাগিনী ঢুকে বসে থাকবে ছোবলের জন্য।
single2-800x1000

প্রয়োজনহীন পুনশ্চঃ এবারের ফিসফাসটা একদম ফিসফাসোচিত হল না। ক্ষমা করবেন পাঠক/ পাঠিকারা, আসলে মনের ভার কম হলেই তো ফুরফুরে ফিসফাস আসবে। তার আগে পর্যন্ত স্বপ্ন দেখা চলুক।

6 thoughts on “(১২৭)

  1. অনেকগুলো বিষয় এক সূত্রে বেঁধেছ সৌরাংশুদা, খুব সময়োপযোগী পোস্ট৷ ‘যিনি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে আইনের মতো এক মহান পেশার প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে চলেছেন, কি মনে হয়, তিনি সরে গেলে আমাদের দেশে ধর্ষণ নাম্নী এই আদিমতর পাপ কমে যাবে?’ – কমবে না, ব্যক্তিগতভাবে আমি একটা পিটিশনে সাইন করেছি, জানি তাতেও কিছু হবে না, কিন্তু সাইন করেছি শুধু এই কারণে যে, পেশাগত যুক্তিও যদি হয়, তবু এঁরা এমন বলতে পারেন না, পেশার আগে মানবিকতার জায়গা থাকে৷ আসলে এই পোস্টটার সব উল্লেখের মধ্যেই ওই একটাই জিনিস, মানবতার মৃত্যু৷ আর এর উত্তরে আবার এক ধরনের ছদ্ম মানবিকতা আছে৷ মানে দেখবে, হঠাৎ করে প্রতিবাদ শুরু, কারও ৩০ বছর আগের একটা গান নিয়ে আর একজন লিখবে, এভাবেই প্রতিবাদ করা উচিত, কীসের প্রতিবাদ, কেন করছি, আমরা নিজেরাই বা কতটা দায়িত্ব পালন করি, মৌলবাদ তো অনেক পরের কথা, সামান্য এর ম্যাগাজিনের কবিতা ও না পড়লে এমন রে রে করে ঝগড়া শুরু হয়, দেখে অবাক লাগে..আমার খুব মনে হয়৷ প্রশ্ন হল কেন মানবিকতার মৃত্যু? রাষ্ট্র কাঠামো তো অনেক বড় কথা, আমরা নিজেরা কি মানবিক ততোখানি? নারীদিবস নিয়ে এত কথা, লিঙ্গবৈষম্য নিয়ে এত পোস্ট, অথম এখনও চেনা বহু লোককে দাঁত বের করে বলতে শুনি, আমি তো বাড়ি গায়ে এক গ্লাস জলও গড়িয়ে খাই না৷ ধর্ষণ, সামাজিক ব্যাধি এসবের থেকে পিছু ফিরতে ফিরতে দেখি সব শিকড় গেড়ে আছে ছোট ছোট ব্যক্তিগত জীবনেই৷ প্রত্যেকে এই বিদ্বেষ আমরা লালন করে চলেছি, একই ধর্ম, একই ভাষার মধ্যেও, একই অফিসে, একই পাড়ার ঠেকে…প্রতি দু’জনে চোরা বিদ্বেষের একটা কৌটো আমরা লুকিয়ে রেখেছি, যতদিন না সেগুলো একটা একটা করে বিদেয় হবে, ততোদিন বৃহত্তর ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটতেই থাকবে৷ কোনও আলোচনাই কার্যকরী নয়, আমার মনে হয়, যতক্ষণ না মানবিক হওয়া আমরা অনুশীলনে অভ্যাসের মধ্যে না আনতে পারি৷

    Liked by 1 person

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান